বাঙালির বিবাহ উৎসব
প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়ে নির্বাচন হলেই ছেলেপক্ষের এবং মেয়েপক্ষের নিকটতম লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাগদান। বাগদান মানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু।
মেয়ের হাতের অনামিকা আঙ্গুলিতে বিয়ের কন্যা-নির্বাচন চিহ্ন হিসেবে আংটি অথবা গলায় সোনার চেইন পরিয়ে পাকা কথা শেষ করা হয়। বর্তমানে ছেলেকেও মেয়েপক্ষের একজন অভিভাবক আংটি পরান।
এক্ষেত্রে ছেলের পক্ষ থেকে প্রধান ভূমিকায় মা-খালারা এবং মেয়ের পক্ষ থেকে বাবা-চাচারাই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। দিন-ক্ষণ ঠিক করে পাকা কথা দিয়ে মিষ্টি মুখ করান একে অপরকে। মুখে সবার হাসি আর কুশলবিনিময় করে আনন্দ ভাগাভাগি করেন দুইপক্ষ।
বাঙালির সবচেয়ে আলোচিত অনুষ্ঠান বিবাহ। বর-কনেকে সাজিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হয়। কবুল কবুল কবুল সম্মতি উচ্চারণ, কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ বিবাহ নিবন্ধন ও উপস্থিত সবার প্রাণখোলা দোয়া মোনাজাত- কিংবা যাজকের সামনে সম্মতি ধ্বনি বা, বৌদ্ধ ভিক্ষুর মঙ্গলবার্তা অথবা অগ্নিকুণ্ড প্রদক্ষিণ ও উলুধ্বনির আবহে মালাবদল এবং পাত্রের হাতে রঙিন হয়ে ওঠা কন্যার সিঁথি এভাবেই খুশির জোয়ারে বিয়ের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে বাঙালি।
জমকালো উৎসবে আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব মিলে পোশাকের জাঁকজমক আর পোলাও, রোস্ট, রেজালা, কাবাব, বোরহানি নিয়ে চলে বাঙালি ভোজন। কন্যাদান এ দিনই হয়। মা-বাবার আদুরে কন্যাকে অশ্রুজলে বিদায় দিয়ে রিক্ত মনে সবাই বাড়ি ফেরেন।
ওদিকে শুরু হয়ে যায় বরপক্ষের আনন্দ। নতুন বউ, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীর মুখরতায় বাড়ি হৈ হৈ রবে পূর্ণ হয়। এভাবে নানা আমোদে ও আয়োজনে দুই-একটি দিন পার হয় বরের বাড়িতে।
নতুন দিন শুরুতে বউভাতের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বরের বাড়িতে। কনেপক্ষের সবাই এ দিন আমন্ত্রিত হন, পাশাপাশি বরপক্ষের এলাকার লোকজন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে ভোজন উৎসবে একত্রিত হন।
আনন্দ হাসি মশকরায় দিনটি শেষে বর ও কনেকে নিয়ে কনের বাবা-মা নিজ বাড়িতে নিয়ে আবার আনন্দের জোয়ার জাগিয়ে তোলেন। প্রতি বছর এমনইভাবে হাজারো বাঙালির বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে।
মুসলিম বিবাহ উৎসব
ধর্মের ব্যাখ্যাতে মুসলমানদের বিবাহ আর ওয়ালিমা ছাড়া আর তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সময় এগোনোর সাথে সাথে নিকটবর্তী লোকাচার ও সংস্কৃতি যুক্ত হয়েছে। গ্রাম ও শহরের মানুষ এখন বেশ কয়েকটি উৎসব রীতিমতো পালন করে যাচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে-
পাত্র-পাত্রী দেখা: মুসলিম সমাজে এখন রীতিমতো পাত্র-পাত্রী দেখা চলছে। সমাজ, সংস্কৃতি, অঞ্চল, শিক্ষা দেখে উভয় উভয়কে পছন্দ করছেন। এটি চলে আসছে আধুনিকের প্রারম্ভ থেকেই।
বাগদান: পাত্র-পাত্রীর পছন্দের চিহ্ন স্বরূপ স্বর্ণ পরিয়ে পরিবারের সম্মতিসাপেক্ষে দিন তারিখ নির্ধারণ করা হয় বাগদানের দিন।
মেহেদি সন্ধ্যা ও গায়েহলুদ: শহরের ঘরে ঘরে এখন মেহেদি সন্ধ্যা করা হয়। বন্ধু-বান্ধবের আনাগোনা, প্রতিবেশীর ফুর্তি আর স্বজনদের বিয়ে ব্যস্ততায় উদযাপিত হয় মেহেদি। হলুদে নাচ-গান আর অভিনয়ের মাঝে উৎসব আরও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।
আকদ: অনেক পরিবারই বিয়ের পর্বটা আগেভাগেই করে রাখেন। এটিই আকদ। পরে উপযুক্ত সময় বুঝে বিয়ের অনুষ্ঠান করে থাকেন।
বিয়ের অনুষ্ঠান: এটি প্রধান অনুষ্ঠান। শেরওয়ানি, শাড়ি বা লেহেঙ্গায় রাজা-রানীর বেশে কন্যাদানের মাধ্যমে পালিত হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।
ওয়ালিমা: বরপক্ষের এই বড় আয়োজনের মাধ্যমে বন্ধু, স্বজন ও এলাকাবাসীকে দাওয়াত দিয়ে করা হয় ওয়ালিমা বা বউভাত অনুষ্ঠান।
হিন্দু বিবাহ উৎসব
আবহমানকাল থেকে হিন্দু বা সনাতন ধর্মীয় বিয়ের রীতিনীতি চলে আসছে। হিন্দু ধর্মের বিয়ে বেশ কয়েকটি আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
পাটিপত্র: বাগদান অনুষ্ঠানে পাটিপত্র করা হয়। এই পাটিপত্র উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে পুরোহিত লেখেন। পাটিপত্রে বর-কনের স্বাক্ষর থাকে। এরপর কোনো পক্ষের অসম্মতি প্রকাশ করার সুযোগ থাকে না। তবে আধুনিক সময়ে অনেকে পাটিপত্র করছেন না।
এরপর আসে আশীর্বাদ আসর। এর প্রধান উপকরণ ধান, দুর্বা, প্রদীপ, চন্দন, পান, সুপারি ও বড় মাছ। পঞ্জিকা অনুসারে শুভদিন দেখে আশীর্বাদ করা হয়।
পানখিল, দধিমঙ্গল ও গায়েহলুদ: গায়েহhttps://www.kabinmarriagemedia.comলুদের অনুষ্ঠানের জন্যও দিনক্ষণ আছে। এখানেও শুভ দিনক্ষণ দেখে গায়ে হলুদের জন্য হলুদ কোটা হয়। পাঁচ-সাতজন সধবা স্ত্রীলোক মিলে হলুদ কোটেন। এই হলুদই পরে গায়ে হলুদের দিন গায়েহলুদ দেয়া হয়।
গায়েহলুদের আগের দিন আরশি দেখা হয়। সাধারণত পাত্র-পাত্রী জরুরি কোনো কাজ না থাকলে অমঙ্গলের কথা ভেবে বাহিরে যান না।
বরবরণ, সাতপাক, শুভদৃষ্টি, মালাবদল, সম্প্রদান ও অঞ্জলি: গোধূলির শেষ লগ্নে অর্থাৎ সন্ধ্যার পর যখন রাত গড়ায় তখন বর বরণ শুরু। অনুষ্ঠান দুই পর্বের। একটি সাজ বিয়ে, অন্যটি বাসি বিয়ে। দুটি আসরই কনের বাড়িতে বসে। তবে কোনো কোনো সময় বাসি বিয়ে বরের বাড়িতেও হয়ে থাকে। সাজ বিয়ে বিয়ের মূল পর্ব।
এই পর্বেই কনে আর বরকে সাতবার প্রদক্ষিণ করে বরণ করে নেয়। বরণ শেষে বর-কনে দুজনের দিকে শুভ দৃষ্টি দেয়, একই সময় মালা বদল করা হয়। পরে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে বর-কনের ডান হাত একত্রে করে কুশ দিয়ে বেঁধে দেন।
সিঁদুর দান: এরপর সিঁদুর দান বা বাসি বিয়ের পর্ব। বাসি বিয়েতে বিভিন্ন দেবদেবীর অর্চনা শেষে বর কনের কপালে সিঁদুর দিয়ে দেন। তারপর উভয় মিলে সাতবার অগ্নিদেবতা প্রদক্ষিণ করেন।
বউভাত: বউভাত অনুষ্ঠান বরপক্ষ অনেক ঘটা করে পালন করেন। বাড়ির বউকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানে।
খ্রিস্টান বিবাহ উৎসব
খ্রিস্টান সমাজেও সাধারণত প্রথমে পাত্রী দেখা হয়। বরপক্ষ কনে নির্বাচন করে কনের চরিত্র, দোষ-গুণ, বংশ পরিচয় জেনে নেন। পরে শুভদিন দেখে শুভকাজ করা হয়।
কনে নির্বাচন ও বাগদান: বরপক্ষের প্রস্তাবে কনেপক্ষ রাজি হলে বাগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কোনো কোনো জায়গায় এ অনুষ্ঠানকে পাকা দেখা-ও বলে। অনেকে এ অনুষ্ঠানকে পানগাছ অনুষ্ঠান বলেন। বাগদান উপলক্ষে পান, সুপারি, বিজোড় সংখ্যক মাছ নিয়ে যাওয়া হয় বলেই এ নাম ধারণা করা হয়।
বাইয়র ও নাম লেখা: এই অনুষ্ঠানে বরপক্ষের লোকজন কনের বাড়িতে যায়; যা আগেই কথা বলে ঠিক করে রাখা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বর-কনে সবার আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। বিয়ের তিন সপ্তাহ আগে কনের বাড়িতে পুরোহিতের কাছে বর-কনে নাম লেখান। অনেকে এ অনুষ্ঠানে আতশবাজি ও বাজনার আয়োজন করেন।
বান প্রকাশ, অপদেবতার নজর ও কামানি বা গা-ধোয়ানী: এই অনুষ্ঠানে বর-কনে বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। মণ্ডলীর বিধি অনুযায়ী এ সময় বিয়ের ক্লাস করতে হয়। এটি বিয়েপূর্ব বাধ্যতামূলক ক্লাস ব্যবস্থা।
নাম লেখা থেকে শুরু করে বিয়ের আগ পর্যন্ত বর ও কনেকে অতি সংযমী জীবন করতে হয়। অনেকে এ সময় ভূত-প্রেত ও অপশক্তির নজর থেকে রক্ষার জন্য জপমালা গলায় পরেন। বিয়ের আগের রাতের অনুষ্ঠানকে গা-ধোয়ানী বলে। অনেক খ্রিস্টান সমাজে এই দিন গায়েহলুদ মাখিয়ে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠান করা হয়।
কনে তোলা: বিয়ের দিন ভোরে বাদক দলসহ বরের আত্মীয়-স্বজন কনের বাড়ি গিয়ে কনেকে নিয়ে আসেন। কনেকে ঘর থেকে আনার সময় তার হাতে পয়সা দেয়া হয়। কনে বাড়ি থেকে আসার সময় সেই পয়সা ঘরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে। এর অর্থ হলো যদিও সে বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছেন তারপরও বাড়ির লক্ষ্মী ঘর থেকে চলে যাচ্ছে না।
গির্জার অনুষ্ঠান: শুরুতে গির্জার প্রবেশ পথে যাজক বর-কনেকে বরণ করে নেন। তারপর বর-কনে দুজনের মধ্যে মালা বদল করা হয়। এরপর কনের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘরে তোলা: এ অনুষ্ঠানে উঠানের দিকে মুখ করে বড় পিঁড়ির উপরে বর-কনেকে দাঁড় করানো হয়। এরপর বর-কনে সাদা-লাল পেড়ে শাড়ির উপর দিয়ে হেঁটে ঘরে ওঠে। এ সময় বর ও কনে একে অপরের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে থাকেন।
বৌদ্ধ বিবাহ উৎসব
ধর্মীয় ও সামাজিক এই দুই দিকের প্রাধান্য দিয়ে বৌদ্ধ বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে থাকে।
পাকা-দেখা: পাকা দেখার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় বিয়ের কথা। পাত্র-পাত্রী উভয়কে দেখে অভিভাবকের মাধ্যমে পাকা কথা ও দিন ধার্য করা হয়।
গায়েহলুদ: বাঙালি সংস্কৃতির সব ধর্মেই এখন গায়েহলুদ অনুষ্ঠান দেখা যায়। বৌদ্ধ ধর্মেও গায়েহলুদ হয়।
বিবাহ অনুষ্ঠান: সামাজিকভাবে সবাইকে নিয়ে ধর্মীয় রীতি ঠিক রেখে বৌদ্ধ বিহারে পাত্র-পাত্রীকে নিয়ে আসা হয়। এখানে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের পূজা করা হয়। ত্রি-স্মরণ পঞ্চশীল পূজার মাধ্যমে বৌদ্ধ ভিক্ষুকের আশীর্বাদ গ্রহণের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
ফুলশয্যা: নতুন বউকে ঘরে এনে বাড়ির সবাই মিলে পালন করেন ফুলশয্যা অনুষ্ঠান। নানা গল্প, তামাশা, খোলা গলায় গান আর নাচে চলে বর ও কনেকে নিয়ে আমোদ।
জামাই বাজার
জামাই বাজার হলো বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানদের বিবাহের পারের একটি লোকাচার। নতুন জামাই বিয়ের পর প্রথম বারের মতো শশুর বাড়ীর জন্য বাজার করে নিয়ে যায়। বৌ ভাতের পর জামাই বৌকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি দুদিন রয়। দ্বিতীয় দিনে, বরের পরিবারকে কনের বাড়িতে খাবারের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং তারা বর ও কনের সাথে চলে যায়। এই খাবারটিকে ফিরানি বা আরইয়া বলা হয়। এই খাবারের জন্য বর দ্বারা কেনাকাটা করা হয়। সাধারনত মাছ, মাংস, তেল, চাল দুধ, মুদি সদাই জামাইরা স্বার্থ অনুযায়ী কিনে থাকে। জামাই শশুর বাড়ী গেলে জামাইকে শাশুড়ি ও শশুরসহ বাড়ীর সবাই আপ্যায়ন করে এক বিশেষ ভোজন দিয়ে।
যেভাবে পরিবারের মতেই ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করবেন
অনেক পরিবারেই বাবা-মা ভেবে থাকেন সন্তান না বুঝে প্রেম করেছে। কিন্তু তারা নিজেরাও খেয়াল রাখেন না যে সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছে। এদিকে সন্তানরা দীর্ঘদিন ধরে কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত। বাড়ি থেকে বিষয়টি জানে কিনা আপনি নিজেও জানেন না। কিন্তু আপনার তো বাড়িতে বিষয়টি অবহিত করা উচিত। কেননা, প্রিয় মানুষটির সঙ্গেই তো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন আপনি। সম্পর্কের মানুষটি যতোই ভালো পরিবারের বা সন্তান হোক না কেন পরিবার থেকে কিন্তু আপনার সম্পর্ক মেনে নিতে চাইবে না। এই ক্ষেত্রে পরিবারকে সন্তানেরই ভালো করে বুঝাতে হবে।
সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্ট করে জানানো : প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সম্পর্কের শুরু, সম্পর্ক কতদিনের এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনার কথা বাড়িতে স্পষ্ট করে জানান। প্রয়োজনে বাড়িতে একদিন নিয়ে আসুন। সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, প্রথমদিনই বিয়ের বিষয়ে কথা বলা যাবে না।
প্রিয় মানুষটিকে পরিবারের অপছন্দের কারণ : আপনি নিজ থেকে জেনে, শুনে এবং বুঝে প্রেম করেছেন। তার পেশা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা অবশ্যই আপনি ভালো করে জানেন। এখন পরিবার থেকে কি প্রসঙ্গে আপত্তি তা স্পষ্ট জানুন। অপছন্দের কারণ সম্পর্কে জানতে পারলে সেই বিষয়ে নতুন করে দু’জন পরিকল্পনা করুন।
মা-বাবা’র মাইন্ডসেট : সকলের মা-বাবাই যে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে তা কিন্তু নয়। এখনো অনেক মা-বাবাই আগের সময়ের মতো করে চিন্তা-ভাবনা করেন। এজন্য আপনার মা-বাবাকে আপনারই বুঝাতে হবে; দায়িত্বটাও আপনার। ভালোবাসার বিয়ে মানেই যে খারাপ বা ভুল সিদ্ধান্ত সে বিষয়ে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য যুক্তি দিয়ে বুঝান।
আপত্তির বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা : প্রিয় মানুষটি সম্পর্কে পরিবার থেকে যেসব আপত্তি উঠে এসেছে তা নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ভাবুন। আপত্তি উঠা বিষয়গুলো প্রিয় মানুষটিকে ভুলেও বলবেন না। এতে সে আঘাত পেতে পারে। তবে ওই সকল বিষয়ে আপনি সচেতন হয়ে প্রিয় মানুষটিকে নতুন করে তৈরি করা শুরু করুন। তাকে ভালো করে বুঝান। আপত্তির বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠবে। প্রয়োজনে সময় নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকুন।
প্রয়োজনে পুনরায় দেখা করা : প্রথম সাক্ষাতে পরিবার থেকে যেসব বিষয়ে আপত্তি উঠে এসেছে সেই সকল বিষয়ে কথা বলার পর আবারও চারজন একসঙ্গে বসুন। বাইরে কোনো রেস্তোরাঁ কিংবা কফিশপের থেকে বাড়িই সবচেয়ে ভালো জায়গা। যে সকল বিষয়ে এখনো আপত্তি তা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং আপনার প্রিয় মানুষটির পক্ষ থেকে যতটা বোঝানো সম্ভব বোঝাবেন।
ব্যর্থতায় সমালোচনা অবশ্যই না : যদি দেখেন কোনোভাবেই পরিবারকে মানাতে পারছেন না আপনি তাহলে এ নিয়ে কথা বলা বন্ধ করুন। পরিবার এবং প্রিয় মানুষকে সময় দিন। তবে অবশ্যই প্রিয় মানুষটিকে সমর্থন করতে হবে আপনার। তার ভালো বিষয়গুলো পরিবারে ইনডিরেক্টলি ফোকাস করতে থাকেন। তাদের এটাও বলুন যে পরিবারের অমতে কাউকে বিয়ে করবেন না আপনি।