যে বিয়েতে খরচ কম এবং সহজ হয়, সে বিয়ে বরকতময় হয়:
ভূমিকা:
বিয়ে মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দুটি আত্মার মিলন, নতুন পরিবার গঠনের সূচনা। কিন্তু বর্তমানে বিয়েকে ঘিরে অপ্রয়োজনীয় আড়ম্বর, অপচয় ও ঋণের বোঝা বহন করার প্রবণতা বেড়েছে। ইসলামে সহজ ও কম খরচে বিয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হাদিসের আলোকে:
- রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে বিয়ে যত সহজ এবং স্বল্প ব্যয়ে হয়, সেই বিয়ে ততই শান্তি ও বরকতময় হয়।” (মিশকাত)
- আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির বিয়ের আয়োজন করার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। আর যে ব্যক্তির সামর্থ্য নেই, সে যেন দীর্ঘ রোজা রাখে, কারণ তা তার জন্য লিবিডো নিরাময়কারী।” (বুখারী ও মুসলিম)
কম খরচে বিয়ের সুবিধা:
- অর্থনৈতিক:ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি, ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের সুযোগ।
- সামাজিক:পারিবারিক অশান্তি কমে, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
- মানসিক:মানসিক প্রশান্তি, দাম্পত্য জীবনে সুখ ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
- ধর্মীয়:ইসলামের নির্দেশাবলী অনুসরণ, আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
কম খরচে বিয়ে সম্পন্ন করার উপায়:
- পরিবারের আলোচনা:বর-কনের পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ের খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া।
- অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দেওয়া:অযথা আড়ম্বর, অপ্রয়োজনীয় অনুষ্ঠান, অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া বাদ দেওয়া।
- সহজ আয়োজন:বিয়ের আয়োজন সহজ ও মিতব্যয়ী করা।
- সামাজিক রীতিনীতি:অযৌক্তিক সামাজিক রীতিনীতি ও দাবি পরিত্যাগ করা।
- স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য:বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য গ্রহণ করা।
উদাহরণ:
- হযরত আলীর (রাঃ) বিয়ে:হযরত ফাতিমা (রাঃ)-এর সাথে হযরত আলীর (রাঃ) বিয়ে ছিল অত্যন্ত সহজ ও মিতব্যয়ী।
- সমসাময়িক উদাহরণ:বর্তমানে অনেকেই সহজ ও কম খরচে বিয়ে করছেন এবং সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন করছেন।
উপসংহার:
বিয়েতে অপ্রয়োজনীয় খরচ করা ইসলামের নির্দেশাবলীর পরিপন্থী। সহজ ও কম খরচে বিয়ে করা ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি, পারিবারিক সুখ-শান
ইসলামে সঠিক বয়সে বিয়ে:
ইসলামে বিয়েকে একটি পবিত্র বন্ধন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিয়ের মাধ্যমে দু’জন মানুষ একত্রিত হয়ে একটি সুন্দর ও সুখী পরিবার গড়ে তোলে।
সঠিক বয়সের সংজ্ঞা:
ইসলামে বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়স নির্ধারণ করা হয়নি। তবে, বিয়ের জন্য কিছু শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা অর্জন করা আবশ্যক।
ছেলেদের জন্য:
- শারীরিক যোগ্যতা:ছেলেদের ক্ষেত্রে বিয়ের জন্য শারীরিকভাবে পরিপক্ক হওয়া প্রয়োজন।
- মানসিক যোগ্যতা:ছেলেদের ক্ষেত্রে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে পরিপক্ক হওয়া এবং পরিবারের দায়িত্ব বহন করার ক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন।
মেয়েদের জন্য:
- শারীরিক যোগ্যতা:মেয়েদের ক্ষেত্রে বিয়ের জন্য শারীরিকভাবে পরিপক্ক হওয়া প্রয়োজন।
- মানসিক যোগ্যতা:মেয়েদের ক্ষেত্রে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে পরিপক্ক হওয়া এবং পরিবারের দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন।
ইসলামে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ:
ইসলামে বাল্যবিবাহ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। বাল্যবিবাহের ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
বিয়ের ক্ষেত্রে পছন্দের অধিকার:
ইসলামে বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়ের পছন্দের অধিকার রক্ষা করা হয়েছে।
বিয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক দিক:
বিয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক দিকগুলোও বিবেচনা করা উচিত। যেমন, বর ও কনের পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ইত্যাদি।
বিয়ের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দিক:
বিয়ের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দিকগুলোও বিবেচনা করা উচিত। বরের আয়ের উৎস, বিয়ের পর কীভাবে সংসার পরিচালনা করা হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো ভেবে দেখা উচিত।
উপসংহার:
ইসলামে সঠিক বয়সে বিয়ে করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিয়ের জন্য শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতার পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলোও বিবেচনা করা উচিত।
বিয়ে নিয়ে ভুলেও কাউকে যে ১৫ কথা বলবেন না!
প্রতিটি মানুষের জীবনে বিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জন্ম ও মৃত্যুর পরই মানুষের জীবনে বিয়ে অনেক বড় একটি ঘটনা। যারা নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেন না তাদের ব্যাপার আলাদা। তবে অধিকাংশ মানুষেরই কিন্তু বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে। তারপরও এমনটা হয়ে থাকে যে, শত চাওয়ার পরও বিয়ে হচ্ছে না বা মনের মতো কাউকে খুঁজে না পাওয়ার জন্য বিয়ে করতে দেরি হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকের অনেক কথা শুনতে হয়। যা শুনতে খুবই তিক্ত লাগে।
বিয়ে হচ্ছে না বা বিয়ে করতে দেরি হচ্ছে তাদের কখনোই এমন কথা বলবেন না যাতে কষ্ট পায় তারা। চলুন এবার তাহলে এমন কিছু কথা জেনে নেয়া যাক- ভুল করেও যে ১৫ কথা কখনো তাদের বলা উচিত না-
১. বয়স হচ্ছে তো, পরে কিন্তু পাত্র-পাত্রী পাবে না : তার বয়স হচ্ছে এটা সে নিজেও বুঝতে পারছে, তাই তো বিয়ের জন্য চেষ্টা করছেন তিনি। অযথা তাকে এ কথা মনে করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই।
২. একটাও প্রেম করতে পারলে না, এখন তো প্রেমেরই যুগ : প্রেমই যদি করতে পারত তাহলে এখনো বিয়ে ছাড়া থাকত না। আবার এমনও হতে পারে যে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিন্তু সেই সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে।
৩. বিয়ের বয়স তো পার হচ্ছে : মূলত বিয়ের বয়স বলতে কিছু নেই। একজন মানুষ যখন মনে করে তিনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত ঠিক তখনই তার বিয়ের বয়স।
৪. বেশি সময় নিলে বাচ্চা হবে না তো : এখন আর এসব কথা বলে মন ভেঙে দেয়ার কোনও অর্থ হয় না। আধুনিক এই যুগে যেকোনো বয়সে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এসব কোনও ব্যাপার না।
৫. বিয়ে হচ্ছে না কেন : আচ্ছা, একবার ভাবুন তো আপনি কি কখনো কারও কাছে আপনার ভুল-ত্রুটিগুলো বলবেন। তাহলে অন্যের বিয়ে না হওয়ার কারণ জানতে চাইছেন কেন?
৬. ছেলে-মেয়েদের পটানো শিখো আমার থেকে : নিজ থেকে কাউকে এ কথা বলা মানে নিজেকে আরও ছোট করা।
৭. ভালো ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ করো : যার বিয়ে তাকেই ভাবতে দিন। কিভাবে এবং কোথায় যোগাযোগ করে বিয়ে করতে হবে এটা তার পরিবারই ভালো জানে।
৮. তোমার চেহারা হয়তো কারো পছন্দ হয় না : মানুষের চেহারা সুন্দর কি অসুন্দর এ নিয়ে কখনো কাউকে কোনও কথা বলবেন না। এতে মানুষ অনেক কষ্ট পায়। তাই এনিয়ে কাউকে খোঁচা দিয়ে কথা বলা কেবলই নিচু শ্রেণির অভদ্রতা।
৯. চিন্তার কারণ নেই, তুমি খুব বেশি বয়স্ক না : এমনিতে বয়স হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে করতে পারছে না। তার মাঝে বয়সের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কি তাকে খোঁচা মারা হয় না।
১০. না বেছে যাকে পাও তাকেই বিয়ে করো : বিয়ে হচ্ছে না, তার মানে এই নয় যে, যাকে পাবে তাকেই সে বিয়ে করব। একটা মানুষ মৃত্যু পর্যন্ত অন্য একজন মানুষের সঙ্গে থাকবে, তো সে কি দেখে-শুনে বিয়ে করবে না!
১১. তোমার এই বয়সে আমার সংসার-সন্তান ছিল : সবার জীবনে একই সময় যেমন বসন্ত আসে না তেমনি সবার এক সময়ে বিয়ে করা হয় না। নিজের প্রতিষ্ঠিত হওয়া, আবার পরিবারকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেকেরই বিয়ে করতে একটু সময় লাগে।
১২. লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করো, দেখো কাউকে পটাতে পারো কিনা : এ কথার অর্থ হচ্ছে সে অসামাজিক। সমাজের কারো সঙ্গে মেলামেশা করতে পারে না। দ্বিতীয়ত তিনি কাউকে পটাতে পারে না। এভাবে কথা বলে কাউকে ছোট করবেন না। এসব খুবই সস্তাদরের উপদেশ।
১৩. বেশি বয়সে বিয়ে করলে অনেক সমস্যা হয় : যার বিয়ে হচ্ছে না এমনিতেই তার মন ভেঙে আছে। তার মাঝে আবার তাকে ভয় দেখানো কোনও বুদ্ধিমান মা১৪. যৌবন তো শেষ হচ্ছে, বিয়ে কি হবে : নিজেই একবার ভাবুন, আপনাকে যদি কেউ এরকম কথা বলে তাহলে আপনার কতটা কষ্ট লাগবে। অন্যকে কষ্ট দেয়া থেকে দূরে থাকাই ভালো নয় কী?
১৫. বিয়ে হচ্ছে না ভেবে মন খারাপ করো না : বিয়ে দেরিতে হতেই পারে। তাই বলে তাকে কথার দ্বারা অযোগ্য বলে বিবেচনা করা একদমই উচিত নয়।
ইসলামে বিয়ের যোগ্যতা।
ইসলামে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ইবাদত এবং সামাজিক ইনস্টিটিউশন। ইসলামে বিয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হল পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে স্থায়ী আনন্দ, সহযোগিতা এবং সম্পর্কের মাধ্যমে পরিবার গঠন এবং সমাজের নির্মাণ। বিয়ে ইসলামে একটি পবিত্র সংস্কার, যা মানবিক সম্পর্কের জন্য দ্বীনী নির্দেশিকা সরবরাহ করে। বিয়ের প্রক্রিয়া ও শর্তগুলির মাধ্যমে ইসলাম সমাজে ভাল অবস্থান ও ন্যায় ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
বিয়ের উপকরণ: ইসলামে বিয়ের উপকরণ হল মহিলার সাথে নিজেকে সমর্পণ করা, দক্ষিণা দেওয়া, মহাজানের সুপারিশ, নিকাহনামা, হালাল আবজাদ ইত্যাদি। এই উপকরণগুলি বিয়ের প্রক্রিয়াকে একটি পবিত্র এবং সামাজিকভাবে গৌরবময় উৎসবে পরিণত করে।
বিয়ের শর্ত: ইসলামে বিয়ে নিয়ে কিছু মৌলিক শর্ত রয়েছে, যেমন মুসলিম হওয়া, স্বাভাবিক মহিলা অথবা পুরুষের সাথে বিয়ে করা, তাফসীলিক নিকাহনামা স্বীকৃতি ইত্যাদি। এই শর্তগুলি বিয়ের মৌলিক প্রতিষ্ঠানের উত্থান এবং স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করে।
বিয়ের প্রক্রিয়া: বিয়ের প্রক্রিয়া তালাক হতে শুরু হয় এবং এটি মেহেনি, কোনো সুবিধাজনক তারিখের পরে সাপ্তাহিক বিয়ে হতে পারে। বিয়ে প্রক্রিয়া হল নিকাহ, বাইদে মেহেনি, আইজহার, নিকাহনামা অনুষ্ঠান, ফিজান, সুত্র মুহূর্ত ইত্যাদি। এই প্রক্রিয়া একটি সম্পূর্ণ পবিত্র ইবাদত এবং সমাজের মধ্যে ব্যবস্থিত ন্যায় ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
বিয়ের লাভ: ইসলামে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ইবাদত হিসেবে বিবেচিত হয়, তার মাধ্যমে পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে সম্পর্ক উন্নত ও স্থায়ী হয়। বিয়ে একটি জীবনের দুর্নিবারণ, যা আদর্শ পরিবারের গঠনে সাহায্য করে এবং সমাজে শান্তি, সুষম ও সহযোগিতা সৃষ্টি করে। তাছাড়াও, বিয়ে মানবিক আনন্দের একটি মূল উৎস এবং ইসলামে পূর্ণতা প্রাপ্তির একটি উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়।
বিয়ের জামিন্দারি: ইসলামে বিয়ের জামিন্দারি পুরুষের উপর রয়েছে, যারা তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিয়ন্ত্রণ করেন। পরিবারের জন্য উপকরণ সরবরাহ এবং স্ত্রীর সম্মান এই জামিন্দারির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
সামাজিক প্রভাব: ইসলামে বিয়ের সামাজিক প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি স্থায়ী সম্পর্ক এবং পরিবার গঠনের একটি উপায় হিসাবে কাজ করে এবং সমাজে মর্যাদা, সহিষ্ণুতা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি দেয়। সমাজের বিভিন্ন উদ্যোগে বিয়ে একটি সংস্কার এবং স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়।
সমাজের নিরাপত্তা: বিয়ে একটি সমাজের নিরাপত্তা বজায় রাখার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং সমাজের নিরাপত্তা বজায় রাখার একটি উপায় হিসাবে কাজ করে এবং সামাজিক অপমান ও পাশাপাশি নারী অধিকার উন্নত করে।
পরিস্থিতি অনুযায়ী বিয়ে: ইসলামে বিয়ের কয়েকটি সুবিধাজনক অনুশীলন রয়েছে, যেমন বিয়ে করা একটি পরিস্থিতি যেমন ভালো পারিবারিক পরিবেশ, আর্থিক স্থিতি, সমাজের মর্যাদা ইত্যাদি। এই পরিস্থিতি অনুযায়ী বিয়ে একটি ধর্মীয় নির্দেশিত সম্পর্ক গঠনের উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়।
উপসংহার: একটি ধর্মীয়, সমাজিক, এবং ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিয়ে ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে প্রমাণিত হয়। এটি মানবিক সম্পর্কের জন্য একটি পবিত্র সাধনা এবং ধর্মীয় নির্দেশিত পথ হিসাবে বিবেচিত হয়। ইসলামে বিয়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যা সামাজিক, আধ্যাত্মিক এবং ধার্মিক মানেও সমৃদ্ধি প্রদান করে।
বিয়ের ক্ষেত্রে কুফু কি?
ইসলামী পরিভাষায়, কুফু বলতে বোঝায় বর ও কনের মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সমানুপাতিক ভারসাম্য। কেবলমাত্র রুপ, বর্ণ, ধন-সম্পদ, বংশ-গোত্র, পদবী, শিক্ষা, চাকরি ইত্যাদির ভিত্তিতে কুফু নির্ধারণ করা উচিত নয়। বরং, সকল দিক বিবেচনা করে সামগ্রিক সামঞ্জস্য বিধান করা জরুরি।
কুফুর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক:
১. ধর্ম: ইসলামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ধর্ম। একজন মুসলিম পুরুষের জন্য মুসলিম নারী এবং একজন মুসলিম নারীর জন্য মুসলিম পুরুষ বিয়ে করা উচিত।
২. নীতি-নৈতিকতা: বর ও কনের নীতি-নৈতিকতা, আচার-আচরণ, চরিত্র ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
৩. বংশ-গোত্র: বংশ-গোত্রের সমতা কাম্য হলেও, এটি বাধ্যতামূলক নয়।
৪. শিক্ষা: বর ও কনের শিক্ষাগত যোগ্যতার মধ্যে অতিরিক্ত ব্যবধান থাকলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. পেশা: পেশাগত সামঞ্জস্যতা সবসময় জরুরি নয়, তবে বর ও কনের পেশা যেন তাদের দাম্পত্য জীবনে বিরূপ প্রভাব না ফেলে, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৬. আর্থিক অবস্থা: ধন-সম্পদের সমতা কাম্য হলেও, এটি বাধ্যতামূলক নয়। বরং, বরের আর্থিক সামর্থ্য যেন স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য যথেষ্ট হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৭. শারীরিক গঠন: রুপ-সৌন্দর্যের চেয়ে স্বাস্থ্য ও শারীরিক গঠন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৮. মানসিক গঠন: বর ও কনের মানসিক গঠন, চিন্তাভাবনা, রুচি-বোধ ইত্যাদির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা জরুরি।
৯. পারিবারিক পরিবেশ: বর ও কনের পরিবারের সাথে তাদের সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত।
১০. পারস্পরিক আগ্রহ: বর ও কনের মধ্যে পারস্পরিক আগ্রহ, ভালোবাসা ও সম্মান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কুফু নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা:
- অতিরিক্তকুসংস্কার: বংশ-গোত্র, পদবী, ধন-সম্পদ ইত্যাদির ভিত্তিতে অতিরিক্ত কুসংস্কার না করা উচিত।
- সামাজিকচাপ: সামাজিক চাপে পড়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিবাহ করা উচিত নয়।
- ব্যক্তিগতপছন্দ: ব্যক্তিগত পছন্দকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।