শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে: ভালো-মন্দ, ভূত-ভবিষ্যৎ

0
55
শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে: ভালো-মন্দ, ভূত-ভবিষ্যৎ
শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে: ভালো-মন্দ, ভূত-ভবিষ্যৎ

শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে: ভালো-মন্দ, ভূত-ভবিষ্যৎ

পরস্পরের প্রতি প্রেম-ভালোবাসায় মগ্ন কাউকে কাউকে শিক্ষার্থী অবস্থাতেই বিয়ে করে ফেলতে দেখা যায়। এতে কেউ কেউ বিয়ের পরের ধাক্কাটা সামলে নিয়ে যেমন চমৎকার দাম্পত্যের উদাহরণ তৈরি করতে পারেন, তেমন মোহভঙ্গের বেদনায় বিদীর্ণ হতেও দেখা যায় অনেককে।

বলা হয়ে থাকে, বিয়ে নামের প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক রাষ্ট্রের চেয়েও অনেক প্রাচীন। সমাজের ক্ষুদ্রতম একক পরিবার গঠনের স্বীকৃত পদ্ধতি হচ্ছে এই বিয়ে। দেশ-সমাজ নির্বিশেষে প্রাচীন এ প্রথাই এখনো পরিবার গঠনের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।

বিয়ে বলতে সাধারণত যে বিষয়গুলো মাথায় আসে তা হলো—বাতাসে সুখাদ্যের সুঘ্রাণ, আলোকসজ্জা, সুশোভন সাজে আগত নিমন্ত্রিতদের সানন্দ আপ্যায়ন, সৌজন্য বিনিময়, আনন্দভোজ, সবাইকে সন্তুষ্ট করে আমন্ত্রণকর্তার পরিতৃপ্তির সন্ধান—এমন অনেককিছু।

মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি হলো এই বিয়ে। সাধারণত বিয়ের আগে পূর্বশর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি থাকে অনেক পরিকল্পনা, নানা মানসিক প্রস্তুতি ও বিবিধ আয়োজন।

তবে সবকিছুতেই কিছু ব্যতিক্রম থাকে। তাই কঠিন বাস্তবতার জমিনে দাঁড়িয়েও পরস্পরের প্রতি প্রেম-ভালোবাসায় মগ্ন কাউকে কাউকে শিক্ষার্থী অবস্থাতেই বিয়ে করে ফেলতে দেখা যায়। এতে কেউ কেউ বিয়ের পরের ধাক্কাটা সামলে নিয়ে যেমন চমৎকার দাম্পত্যের উদাহরণ তৈরি করতে পারেন, তেমন মোহভঙ্গের বেদনায় বিদীর্ণ হতেও দেখা যায় অনেককে।

উদাহরণ হিসেবে এখানে সাদিয়া ও মারুফের (ছদ্ম নাম) অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। নতুন জীবন শুরু করতে দুজনের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার চেয়ে বেশি আর কী দরকার—ঠিক এই ভাবনা থেকেই শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন তারা। উচ্চশিক্ষার জন্য তারা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর গ্রুপ স্টাডি, অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস শেষে চায়ের আড্ডা, দল বেঁধে ঘোরঘুরির একপর্যায়ে দুজনের মনে হয় বন্ধুর চেয়ে সম্পর্কে খানিকটা তারা এগিয়েই গেছেন।

পরে দ্বিতীয় বর্ষে এই সম্পর্ককে শক্ত ভিত দিতে দুই পরিবারের মৌন সম্মতিতে বিয়েটা সেরে ফেলেন সাদিয়া-মারুফ। তবে সংসার করা শুরু হয় না তখনো। কিছুদিনের মধ্যে টিউশনির টাকায় ‘সাবলেট’ বাসায় সংসার শুরু করলেও আর্থিক টানাপোড়েনের পাশাপাশি পড়াশোনাসহ বিভিন্ন মানসিক চাপের কারণে পারিবারিক দ্বন্দ্ব শুরু হয় তাদের মধ্যে।

এর উল্টো চিত্রও আছে। এক্ষেত্রে তন্বী ও সজলের গল্পটা ভিন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে থাকা অবস্থায় পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। এরমধ্যে তারা সংসার জীবনের ১৪টি বছর কাটিয়ে ফেলেছেন।

বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছেন তন্বী। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের যতই সামর্থ্য থাকুক না কেন, আমাদের শখ-আহ্লাদ মেটানোর দায়িত্ব নিতে তারা বাধ্য নন—এ বিষয়টি শুরু থেকেই আমাদের মাথায় ছিল। তাই নিজেদের শখের লাগাম নিজেরাই টেনে ধরেছিলাম আমরা। এভাবে শখ আর সাধ্য মিলিয়ে নিলে, সঙ্গে লোক দেখানো ব্যাপারটা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা না থাকলে অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা খুব সম্ভব বলে আমাদের মনে হয়। এটা আমরা জীবন থেকেই শিখেছি।’

সময় পরিক্রমায় আমাদের সমাজ এখন প্রেমের বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো পোক্ততা অনেকটা অর্জন করেছে। কিন্তু শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ের বিষয়ে এখনো সেটা হয়নি। অনেকের ধারণা, প্রেম করলে কেবল লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। আর বিয়েতে ক্যারিয়ারের সর্বনাশ ঘটে যায়। একজন মেয়ে পড়াশোনা চলাকালীন ২০-২১ বছরে বিয়ে করলে এই সমাজ আড়চোখে না তাকালেও ছেলেদের রীতিমতো তোপের মুখে পড়তে হয়। সেটা সামাজিক ও পারিবারিক—দুই পর্যায়েই।

শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে।

এই চিকিৎসকের ভাষ্য, ‘(শিক্ষার্থী থাকাকালীন) যেহেতু আর্থিক সংগতি থাকে না, পড়াশোনার চাপ থাকে, মানসিক পোক্ততা ঠিকঠাক আসে না, সেহেতু তখনকার বিয়ে সঙ্গীদের মধ্যে একটা বাড়তি চাপ তৈরি করে। বিয়ে হলো স্বামী-স্ত্রীর বোঝাপড়া ও এক ধরনের টিমওয়ার্ক, যেখানে চিন্তাভাবনা বা একসঙ্গে কাজ করার পারদর্শিতার দরকার হয়। এ কারণে আবেগের বশবর্তী হয়ে বিয়ে করলেও পরবর্তীতে মতের মিল হবে কিনা, বোঝাপড়া থাকবে কিনা—এ বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে।’

শিক্ষার্থী অবস্থায় মূল কাজ হচ্ছে পড়াশোনা করা। নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করা। এক্ষেত্রে পরিবার থেকে পূর্ণ সহেযোগিতা না পেলে বিয়েটা যে কারুর জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাধারণত এ ধরনের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি কমই থাকে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটি ছেলে কিংবা একটি মেয়েকে হয়তো সময়ের আগেই বিয়ে করতে হয়। এতে দেখা যায়, অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে দাম্পত্য জীবনের শুরুতে যে ধরনের বোঝাপড়া তৈরি হওয়া দরকার সেটা হয় না। পাশাপাশি নিজেরা কর্মজীবনে উন্নতি করতে না পারলে পারস্পরিক সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়ে।

এর বিপরীতে এ ধরনের বিয়ের কিছু ভালো দিকও চোখে পড়ে। বিয়ের মাধ্যমে যেহেতু সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতি ও সমর্থনটা পাওয়া যায় তাই অনেক ক্ষেত্রে মানসিক চাপ অনেকটা কমে আসে। এছাড়া দুজনই শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন বলে ‘অ্যাকাডেমিক’ পড়াশোনায় একে অপরকে উৎসাহ দিতে পারেন। একই বিভাগের শিক্ষার্থী হলে পরস্পরের সহযোগী হয়ে উঠে সহপাঠীদের চেয়ে খানিকটা এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়।

পরিবারের করণীয়

আবার পড়তে পড়তে বিয়েতে পারিবারিক সম্মতি যেমন সব সময় পাওয়া যায় না, তেমনি এখানে আস্থার জায়গাটাও থাকে নড়বড়ে। পরিবারের অন্য সদস্যদের মনে রাখতে হবে, একটা সময় পর্যন্ত এই দম্পতিদের একটু সুযোগ দিলে বা সহযোগিতা করলে তারাও সফল দম্পতি হিসেবে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারেন। আবার একটুখানি অসহযোগিতা তাদের জীবনকে থমকে দিতে পারে। এমনকি সংসার শুরুর আগেই হয়ে যেতে পারে বিচ্ছেদ। তাই নিজেদের সন্তানের কথা ভেবে হলেও তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত। তা না হলে সন্তানের আরও ভুল পথে পা বাড়ানোর সম্ভাবনা থেকে যায়।

সর্বোপরি যারা শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে করতে চান তাদের অবশ্যই মনে রাখা উচিত—বিয়ে মানে কোনোভাবেই বিনোদন কিংবা ক্ষণিকের আবেগ নয়; বরং বিয়ে শব্দটি অনেকটা দায়িত্বশীলতারই সমার্থক।

বউ-শাশুড়ি কি বন্ধু হতে পারেন

বউ-শাশুড়ি কি বন্ধু হতে পারেন
বউ-শাশুড়ি কি বন্ধু হতে পারেন

বউ-শাশুড়ির মধ্যে একটি বন্ধুত্ব স্থাপনের ব্যাপারে বলতে হলে প্রথমেই এই দুটি সম্পর্কের মধ্যে সামান্য বা অদম্য পার্থক্যের কারণ এবং মৌল্যবান সম্পর্কের ভিন্ন দিকে মনোনিবেশ করা জরুরি। বউ-শাশুড়ি হওয়া মৌল্যবান এবং দুটি ব্যক্তির মধ্যে একটি সম্পর্ক কে বন্ধুত্বে উন্নত করা বলে মনে হতে হবে। এই সংস্থানাওয়াড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত করার জন্য ২০০০ শব্দ ব্যবহার করা হলে, নিচে কিছু মৌল্যবান বিচার প্রস্তুত করা হলো:

বউ-শাশুড়ি সম্পর্ক হলো একটি অতীত থেকে আসা এবং ভবিষ্যতে প্রস্তুত থাকা দুই পরিবারের মধ্যে একটি গহন সংবাদ, একটি সংবাদ যে দুই পরিবারকে একসাথে সংযোজন করে এবং সমৃদ্ধি এবং পরস্পরের সহানুভূতির মাধ্যমে একটি অসীম সম্পর্ক তৈরি করে।

প্রথমত, এই দুই পরিবারের মধ্যে সম্বন্ধের সৃষ্টি হয়েছে কেমনভাবে? এই মৌল্যবান বন্ধুত্বের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? বউ-শাশুড়ি দুই পরিবারের মধ্যে কিভাবে প্রবৃদ্ধি করেছে? এই দুই পরিবারের মধ্যে পরস্পরের উপর কোনও প্রতিবন্ধক আসা কেন?

এই সম্বন্ধের দুই প্রধান অংশ হলো সাহায্য, সহানুভূতি এবং মাধ্যমিক ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুলি। বউ-শাশুড়ি হওয়া মৌল্যবান হওয়ায় এই তিনটি দিক মৌল্যবান করতে হবে। যেমন, সাহায্য প্রদানের জন্য একই পরিবারের সদস্যদের একে অপরকে সাহায্য করতে দেখা যায়, শক্তির সাথে পৃথিবীর সমস্ত ক্ষেত্রে সাহায্য করা হয়েছে।

একইভাবে, সহানুভূতি একে অপরের সাথে যে সহানুভূতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, সেটি আমাদের সমাজের একটি গভীর প্রতিষ্ঠা তৈরি করতে সাহায্য করে। এই বন্ধুত্বে আসলে প্রতি প্রতিভাষীতা এবং আদর্শমূলক স্বাভাবিকতা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

মাধ্যমিক ব্যক্তিগত সম্পর্কের দিকে তাকালে, এই বন্ধুত্বের ভিন্ন মাধ্যম এবং ভাষা অনেকটা আমাদের সমাজের ভিন্ন বর্গে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সংবাদ এবং বিচার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এই বন্ধুত্বের মৌল্যবান মূলগুলি অসীম সম্পর্কের জন্য একটি অসীম ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক হতে পারে। এটি একে অপরের সাথে বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমস্যা সমাধানের উপায় বোঝাতে সাহায্য করতে পারে, তার মাধ্যমে দুই পরিবারের মধ্যে উন্নত সহযোগিতা তৈরি করতে পারে।

এই মৌল্যবান বন্ধুত্বে পরস্পরের সাথে ভাল সম্পর্ক মেনে চলতে হবে। বউ-শাশুড়ির মধ্যে একটি মৌল্যবান বন্ধুত্ব তৈরি করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্ধুত্ব তৈরি করতে হলে দুই পরিবারের মধ্যে সমানুভূতি, আদর, সহানুভূতি এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে এক অপরকে গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

নববধূর সঙ্গে কেমন হবে শ্বশুরবাড়ির সম্পর্ক

নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নববধূর প্রচেষ্টার সঙ্গে প্রয়োজন শ্বশুরবাড়ির মানুষজনের সহযোগিতার মনোভাব। পরিবারের নতুন সদস্যকে আপন করে নেওয়ার কাজটি মূলত তাদেরই করতে হবে।

আফসানা রহমান (ছদ্মনাম) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। নিজের পছন্দে বিয়ে করেছেন, তারপরও মনে খানিকটা ভয় ছিল নতুন পরিবার আর পরিবেশ নিয়ে। তবে শ্বশুরবাড়ির আন্তরিক আচরণ নতুন পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব সাহায্য করেছে তাকে।

তবে সমাজে ভিন্ন ঘটনাও আছে। এনজিওতে কর্মরত স্বপ্না জাহানের (ছদ্মনাম) মতো অনেকেরই শ্বশুরবাড়ির অভিজ্ঞতা প্রথম দিকে মোটেও সুখকর হয় না। তিনি বলেন, ‘কী করব, কাকে জিজ্ঞেস করব সবকিছু মিলিয়ে প্রথম থেকে বেশ অস্বস্তি হতো। তবে সময়ের সঙ্গে অস্বস্তি কাটিয়ে উঠেছি।’

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিয়ে শুধু নর-নারীর বন্ধন নয় বরং দুটি পরিবারের সামাজিক মেলবন্ধনের সৃষ্টি করে। দুটি ভিন্ন পরিবার, ভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিষয় থাকে এখানে। নববধূকে যেহেতু নতুন পরিবেশে আসতে হয় তাই মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ভূমিকা বেশি।

  • নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নববধূর প্রচেষ্টার সঙ্গে প্রয়োজন শ্বশুরবাড়ির মানুষজনের সহযোগিতার মনোভাব। পরিবারের নতুন সদস্যকে আপন করে নেওয়ার কাজটি মূলত তাদেরই করতে হবে।
  • নববধূকে শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ সম্পর্কে শুরুতেই ধারণা দিয়ে দেওয়া ভালো। যেমন পরিবারের সদস্যদের কী অভ্যাস, কে কী পছন্দ করে সেটি সম্পর্কে আগে বলে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি জেনে নিতে হবে তার পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কেও। এতে পরবর্তী সময়ে আর অহেতুক কোনো জটিলতা তৈরি হবে না।
  • ভাষার ব্যবহারে হওয়া উচিত সতর্ক। নববধূর সঙ্গে আন্তরিকতা নিয়ে কথা বলুন। এতে তিনি যেমন স্বস্তি পাবেন তেমনই তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। নিজের চেনা পরিবেশ ছেড়ে আসার কষ্ট সামলে উঠে শ্বশুরবাড়ির অচেনা পরিবেশ ও জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এমন আচরণ খুব সহায়ক হবে নববধূর। নববধূরও চেষ্টা করতে হবে আন্তরিকভাবে কথা বলার।
  • স্বামী-স্ত্রীকে নিজেদের সময় কাটাতে সুযোগ দেওয়া উচিত। দাম্পত্য জীবনের প্রথম দিকেই বোঝাপড়ার বিষয়টি খুব জরুরি। তাদের বোঝাপড়া নিজেদের করে নিতে দিতে হবে। মাঝখানে পরিবারের সমদস্যদের মতামত সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • নববধূর ঘাড়ে কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। প্রথমেই কোনো বড় কাজের দায়িত্ব দেওয়া উচিত নয়। নতুন বউ কাজ করতে চাইলে সকালের চা বানানো, বিকেলের নাশতা, ঘর গোছানো ও বাগান পরিচর্চার মতো ছোট ছোট কাজ তাকে দেওয়া যেতে পারে। তাকে অভ্যস্ত হতে দিন আগে।
  • প্রতিটি পরিবারে নিজস্ব নিয়ম থাকে। তাই বলে পরিবারে প্রবেশ করার সঙ্গেসঙ্গেই নববধূর ওপর তা চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। মানুষ একেক পরিবেশে একেক রকম অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠে। নতুন পরিবেশ, নিয়মকানুনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে নববধূরও খানিকটা সময়ের প্রয়োজন। সময়ের সঙ্গে তিনি নতুনবাড়ির সঙ্গে মানিয়ে নেবেন। এ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা উচিত নয়।
  • নতুন পরিবারে নববধূর সবচেয়ে কাছের মানুষ স্বামী। এ জন্য স্বামীর রয়েছে বাড়তি দায়িত্ব। নববধূর সুবিধা-অসুবিধার দিকটি সবার আগে বেশি খেয়াল রাখতে হবে তাকে। যেকোনো সমস্যায় দাঁড়াতে হবে পাশে। স্ত্রীকে নতুন বাড়িতে অভ্যস্ত করতে এবং সবার সঙ্গে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে দিতে স্বামীকে বলিষ্ঠ ও কৌশলী ভূমিকা পালন করতে হবে। আর স্ত্রী যদি কর্মজীবী হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রেও সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে স্বামীকেই। তার কাজের গুরুত্ব ও কাজের জায়গা সম্পর্কে নিজের বাড়ির মানুষকে বুঝিয়ে বলতে হবে।
  • দীর্ঘদিনের চেনা পরিবেশ ছেড়ে, পরিবারের সদস্যদের রেখে যখন একজন নতুন পরিবেশে আসেন তখন বাবা-মা ভাই-বোনদের জন্য মন খারাপ হবে— এটি স্বাভাবিক। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলুন, একসঙ্গে চা পান করুন কিংবা পারিবারিক আড্ডায় তাকে নিন। মাঝেমাঝে পরিবারের বিষয়ে তার মতামত নেওয়া হলে তিনি নিজেকে পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে মনে করবেন এবং সবাইকে আপন ভাবা তার জন্য সহজ হবে।

সবশেষে বলা যায়, বিয়ের পর আন্তরিক আচরণ দিয়ে আপন করে নিলে নববধূর জীবন যেমন সহজ হবে, তেমনি সারাজীবন দুই পক্ষের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।

Bangladeshi marriage LAW

Bangladeshi Matrimonial Site

Bangladeshi Matrimony

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here